৪১ খুচরা সার বিক্রেতার লাইসেন্স বাতিলের সুপারিশ

বড়াইগ্রাম (নাটোর) প্রতিনিধি:
  • আপডেট টাইম বুধবার, ২১ সেপ্টেম্বর, ২০২২
  • ২৫৪ টাইম ভিউ

নাটোরের বড়াইগ্রামে ডিলার নিয়োগ ও সার বিতরণসংক্রান্ত সমন্বিত নীতিমালা লঙ্ঘন করায় ৪১ জন কার্ডধারী খুচরা সার বিক্রেতার লাইসেন্স বাতিল ও জামানত বাজেয়াপ্তের সুপারিশ করা হয়েছে।

উপজেলা সার ও বীজ মনিটরিং কমিটির সদস্যসচিব ও কৃষি কর্মকর্তা শারমিন সুলতানা কমিটির সভাপতি ইউএনও মারিয়াম খাতুনের কাছে লিখিত সুপারিশ করেন।

এ বিষয়ে নীতিমালা অনুযায়ী দ্রুত ব্যবস্থা নিতে বলেছেন স্থানীয় সংসদ সদস্য ও কমিটির প্রধান উপদেষ্টা মো. আব্দুল কুদ্দুস।

যেসব খুচরা সার বিক্রেতার কার্ড বাতিলের সুপারিশ করা হয়েছে, তারা হলেন—১ নম্বর জোয়াড়ী ইউনিয়নে মো. সাইদুর রহমান, মোছা বিলকিস বেগম ও মো. ছাকিম উদ্দিন; ২ নম্বর বড়াইগ্রাম ইউনিয়নে মো. ওসমান গণি, মো. আসিফ রাব্বি ও মো. রবিউল করিম; ৩ নম্বর জোনাইল ইউনিয়নে মো. তোজাম্মেল হক, মো. বদিউজ্জামান, মো. হায়দার আলী, শ্রী রতন কুমার সাহা, মো. আব্দুল করিম, মো. কামাল হোসেন, মো. খলিলুর রহমান ও মো. আইয়ুব আলী; ৪ নম্বর নগর ইউনিয়নে মো. তোরাব হোসেন, মো. ইসমাইল হোসেন, মো. সাজেদুর রহমান, মো. ইয়াকুব আলী, মো. সিরাজুল ইসলাম, মো. রকিব মৃধা, মো. রাকিবুজ্জামান রান্টু, মো. গোলজার হোসেন ও মোজাফ্ফর হোসেন; ৫ নম্বর মাঝগাঁও ইউনিয়নে মো. শহিদুল ইসলাম, মো. আব্দুল মান্নান, মো. মোস্তাফিজুর রহমান ও মো. সাইফুল ইসলাম বাদশা; ৬ নম্বর গোপালপুর ইউনিয়নে মো. আব্দুল হালিম, মো. সহিদুর রহমান, নুর মোহাম্মদ দেওয়ান, রাজু আহম্মেদ ও রাজু আহম্মেদ; ৭ নম্বর চাঁন্দাই ইউনিয়নে মো. বাবুল সরকার, মো. শফিউল গণি, মো. শাকিল হোসেন, মো. সাজেদুর রহমান, বনপাড়া পৌরসভায় মো. সুলতান খাঁ, মো. ইমান হোসেন মুন্সি, মো. নাজমুল ইসলাম ও মো. তাইজুল ইসলাম এবং বড়াইগ্রাম পৌরসভায় মো. নজরুল ইসলাম ও শ্রী প্রসাদ চন্দ্র মন্ডল।

উপজেলা কৃষি অফিস সূত্রে জানা যায়, কৃষক পর্যায়ে রাসায়নিক সারের সুষ্ঠু বণ্টন ও কৃষকের কাছে সার পৌঁছে দিতে ২০১০ সালে কৃষি মন্ত্রণালয় থেকে ওয়ার্ডভিত্তিক খুচরা কার্ডধারী সার বিক্রেতা নিয়োগের সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়। সেই মোতাবেক বড়াইগ্রামের দুটি পৌরসভা ও সাতটি ইউনিয়নের মোট ৮১টি ওয়ার্ডে ৩০ হাজার টাকা করে জামানত নিয়ে ৮১ জন কার্ডধারী খুচরা সার বিক্রেতা নিয়োগ করে উপজেলা সার ও বীজ মনিটরিং কমিটি। নিয়োগ নীতিমালা অনুসারে এই বিক্রেতারা নিজ নিজ ওয়ার্ডের মধ্যে সুবিধাজনক স্থানে বসে দোকান পরিচালনা করবেন। তাঁরা উপজেলার ১১ জন বিসিআইসি সার ডিলারের কাছ থেকে সরকারি বরাদ্দের ৫০ শতাংশ সার গ্রহণ করবেন এবং সরকারনির্ধারিত মূল্যে সংশ্লিষ্ট ইউনিয়নের মধ্যে বিক্রি করবেন। অতিরিক্ত মূল্যে সার বিক্রি করলে, অবৈধভাবে মজুত করলে বা কর্তৃপক্ষের পূর্ব অনুমতি ছাড়া পরপর দুবার বা বছরে তিনবার বিসিআইসি সার ডিলারদের কাছ থেকে সার কেনা থেকে বিরত থাকলে তার কার্ড বাতিল করাসহ শাস্তিমূলক ব্যবস্থা গ্রহণ করা হবে।

উপজেলা কৃষি কর্মকর্তা শারমিন সুলতানা জানান, বড়াইগ্রামে ৮১ জন খুচরা কার্ডধারীর জায়গায় ৬১ জন বহাল রয়েছেন। অবশিষ্ট ২০ জন আবেদন করে তাঁদের নামের লাইসেন্স প্রত্যাহার করিয়ে নিয়েছেন। এই ৬১ জনের মধ্যে ৪১ জনকে দুই মাসের সময় দিয়ে একাধিকবার নোটিশ দেওয়া হলেও তাঁরা নীতিমালা অনুসারে নির্ধারিত স্থানে দোকান স্থানান্তর করেননি। অতিরিক্ত দামে সার বিক্রি করেছেন এবং অবৈধভাবে মজুত করেছেন। এ কারণে ইতিমধ্যে কয়েকটি দোকানে ভ্রাম্যমাণ আদালত পরিচালনা করে জরিমানা আদায় করা হয়েছে। এ ছাড়া কয়েকজন বিক্রেতা গত ৯ মাসে কোনো সারও উত্তোলন করেননি। তাই ডিলার নিয়োগ ও সার বিতরণসংক্রান্ত নীতিমালা ২০০৯ অনুযায়ী কমিটির সভাপতির কাছে উল্লিখিত কার্ডধারী খুচরা সার বিক্রেতাদের খুচরা কার্ড বাতিল করা এবং তাঁদের জামানতের টাকা বাজেয়াপ্ত করার অনুরোধ করা হয়েছে।

এ বিষয়ে উপজেলা কার্ডধারী খুচরা সার বিক্রেতা কমিটির সভাপতি আকরাম হোসেন বলেন, ‘আমরা উপজেলা সার ও বীজ মনিটরিং কমিটির কাছ থেকে দুই মাস সময় চেয়েছি। ইতিমধ্যে এক মাস শেষ হয়েছে। আগামী এক মাসের মধ্যে নিজ নিজ ওয়ার্ডে চলে যাবে। আর যারা অন্যায় করেছে তাদের বিষয়ে আমার কিছু বলার নাই।’ তবে কত তারিখ থেকে এই দুই মাসের শুরু হয়েছে এমন প্রশ্নে তিনি কোনো উত্তর দেননি।

এ দিকে উপজেলা সার ও বীজ মনিটরিং কমিটির সভাপতি ইউএনও মারিয়াম খাতুন জানান, নীতিমালা অনুসারে ৪১ জন কার্ডধারী খুচরা সার বিক্রেতার লাইসেন্স ও জামানত বাতিলের সুপারিশ করেছেন কৃষি অফিসার। আগামী ২৫ সেপ্টেম্বর (রোববার) এ বিষয়ে সার ও বীজ মনিটরিং কমিটির সভা ডাকা হয়েছে। সেখানে এ বিষয়ে চূড়ান্ত সিদ্ধান্ত নেওয়া হবে বলে জানা গেছে।

এই বিভাগের আরও খবর
© All rights reserved © 2019 SSB24.COM
Theme Dwonload From ThemesBazar.Com