বিসমিল্লাহ হাসপাতালের ব্যবস্থাপনা পরিচালক ধর্ষণের দায়ে কারাগারে!

নাটোর প্রতিনিধি:
  • আপডেট টাইম শুক্রবার, ১১ আগস্ট, ২০২৩
  • ১৪১ টাইম ভিউ

নাটোরে গোসলের ভিডিও দিয়ে ব্লাকমেইল করে টানা দুই বছর এক নারীকে ধর্ষণের অভিযোগে ‘বিসমিল্লাহ হাসপাতালে’র ব্যবস্থাপনা পরিচালক উজ্জল মৃধা(৩২) নামের এক যুবককে কারাগারে পাঠিয়েছে আদালত।

উজ্জল মৃধা নাটোর শহরের কানাইখালি এলাকার বিসমিল্লাহ হাসপাতালের ব্যবস্থাপনা পরিচালক। তিনি নলডাঙ্গা উপজেলার পূর্ব মাধনগর গ্রামের আক্তার হোসেনের ছেলে। ভুক্তভোগী নারী নলডাঙ্গা উপজেলার বাসিন্দা। তিনি ওই হাসপাতালের মাঠকর্মী হিসেবে কর্মরত ছিলেন। বৃহষ্পতিবার(১০জুলাই)বিকেলে নাটোর সদর আমলি আদালতের বিচারক মো. রওশন আলমের আদালতে আত্নসমর্পণ করলে উজ্জলকে কারাগারে পাঠানোর নির্দেশ দেন আদালত।

এর আগে ভুক্তভোগী নারীর গোসলের ভিডিও ধারণ করে ব্লাকমেইলের মাধ্যমে টানা দুই বছর ধরে ধর্ষণের অভিযোগে নাটোর সদর থানায় মামলা করেন ওই ভুক্তভোগী নারী। ওই নারীর অভিযোগ থেকে জানা যায়, চার বছর আগে অভিযুক্ত উজ্জলের সাথে তার পরিচয় হয়। এক রোগীকে ওই ক্লিনিকে চিকিৎসা দিতে আনার সূত্র ধরে উজ্জলের সাথে তার যোগাযোগ হয়। তখন উজ্জল নির্দিষ্ট কমিশন প্রদানের শর্তে ভুক্তভোগী নারীকে ওই ক্লিনিকে রোগী পাঠাতে বলেন। এভাবে ধীরে ধীরে উজ্জলের সাথে সখ্যতা গড়ে ওঠে ভুক্তভোগী নারীর। এক পর্যায়ে উজ্জল ওই নারীকে ক্লিনিকের মাঠকর্মী হিসেবে কাজের প্রস্তাব দিলে তিনি রাজি হন।তখন থেকে হাসপাতালে চাকরির পাশাপাশি রোগী বেশি থাকলে বা কোনো রোগীর রাতে অপারেশন হলে ভুক্তভোগী নারী রাতে হাসপাতালে অবস্থান করতেন।
তার কাছ থেকে আরও জানা যায়,২০২১ সালের মাঝামাঝি রোগীর চাপের কারনে একদিন তিনি হাসপাতালে অবস্থান করেন। ওইদিন বাথরুমে গোসলের সময় উজ্জল গোপনে সেই ভিডিও ধারণ করেন। ভিডিওর কথা গোপন রেখে কথাবার্তার মাধ্যমে বন্ধুত্ব গড়ে তোলেন। এক পর্যায়ে অবৈধ শারীরিক সম্পর্কের প্রস্তাব দেন উজ্জল। রাজি না হওয়ায় গোপনে ধারন করা গোসলের ভিডিও সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে ছড়িয়ে দেবার হুমকি দেন।

ওই নারী ঘটনাটি পুলিশকে জানানোর উদ্যোগ নিয়ে উজ্জ্বল তাকে হাসপাতালের কাজে যোগ দিতে বলেন ও তার সামনে ফোন থেকে গোসলের ভিডিওটি ডিলিট করার আশ্বাস দেন। উজ্জলকে বিশ্বাস করে ওই নারী বিকেলে হাসপাতালে কাজে যোগ দিতে গেলে হাসপাতালের ৬ তলায় উজ্জলের শোবার ঘরে ডেকে নিয়ে যান ও রাতভর তাকে ধর্ষণ করেন। এই ধর্ষণের ভিডিও গোপন ক্যামেরায় ধারণ করেন উজ্জল।এবার এই ভিডিও ছড়িয়ে দেবার হুমকি দিয়ে টানা দুই বছর উজ্জল তার শোবার ঘরে নিয়ে ওই নারীকে ধর্ষণ করেন। এই সময়ের মধ্যে ওই নারী গর্ভধারণ করলে উজ্জল জোরপূর্বক গর্ভপাত ঘটাতে বাধ্য করেন।’

সর্বশেষ গত ২রা জুন উজ্জল আবারো ওই নারীকে হাসপাতালে তার কক্ষে আটকে ধর্ষণ করে। অবশেষে সইতে না পেরে ওইদিন সে নাটোর থানায় মামলা দায়ের করে। ভুক্তভোগী নারী বলেন, গোপন ছবি ও গোসলের ভিডিও ধারণের পর ব্লাকমেইল করে উজ্জল শহরের একাধিক নারীর সঙ্গে শারীরিক সম্পর্ক করেছেন। তার এই কাজে বিসমিল্লাহ হাসপাতালের অন্য পার্টনাররা জড়িত আছেন। তাদের সহযোগিতায় সে আমাকে দুই বছর ধরে ধর্ষণ করেছে। তার মোবাইল,ল্যাপটপ ও অন্য ডিভাইসে এসব ছবি ও ভিডিওর প্রমাণ পাওয়া যাবে। আমি এ ঘটনায় বিচার চাই।

সদর থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) নাসিম আহমেদ বলেন, ‘ধর্ষণের অভিযোগে ভুক্তভোগী নারী থানায় মামলা দায়ের করে। পুলিশ গুরুত্বের সাথে মামলাটি নিয়েছে। ইতি মধ্যেই আমারা তদন্ত শুরু করেছি।
নাটোর জেলা পুলিশ সুপার তারিকুল ইসলাম পিপিএম জানান, ‘হাসপাতালে ভেতরে একজন নারীকে দিনের পর দিন ধর্ষণ করার ঘটনাটি পুলিশ অত্যন্ত গুরুত্ব দিয়ে দেখছে। অভিযুক্ত পরিচালকের মোবাইল ফোন, ল্যাপটপ বা অন্য কোনো ডিভাইসে আরো অন্য নারীদের ব্লাকমেইলের কোনো ছবি বা ভিডিও রয়েছে কি না তা অনুসন্ধান করবে পুলিশ। অপরাধ করে কেউ পার পাবে না।’

3 thoughts on "বিসমিল্লাহ হাসপাতালের ব্যবস্থাপনা পরিচালক ধর্ষণের দায়ে কারাগারে!"

Comments are closed.

এই বিভাগের আরও খবর
© All rights reserved © 2019 SSB24.COM
Theme Dwonload From ThemesBazar.Com